পোপ ফ্রান্সিস আর নেই
অনলাইন নিউজ ডেক্স

ইস্টার সোমবারে ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্তায় নিজের বাসভবনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। ভ্যাটিকানের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য তিনি ছিলেন এক নির্লোভ, মানবিক ও সংস্কারমুখী নেতার প্রতিচ্ছবি।ভ্যাটিকান ক্যামেরলেনগো কার্ডিনাল কেভিন ফেরেল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আজ সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে রোমের বিশপ ফ্রান্সিস স্বর্গীয় পিতার সান্নিধ্যে ফিরে গেছেন। তার পুরো জীবন ছিল প্রভু ও চার্চের সেবায় উৎসর্গিত’।‘তিনি আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন কীভাবে গসপেলের মূল্যবোধকে বিশ্বাস, সাহস এবং সার্বজনীন ভালোবাসা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হয়, বিশেষ করে দরিদ্র ও প্রান্তিকদের প্রতি। যীশু খ্রিষ্টের একজন প্রকৃত শিষ্য হিসেবে তাঁর জীবন আমাদের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। আমরা পোপ ফ্রান্সিসের আত্মাকে সর্বশক্তিমান, ত্রয়ী ও করুণাময় ঈশ্বরের হাতে সঁপে দিচ্ছি।’গত কয়েক মাস ধরেই পোপ গুরুতর অসুস্থ ছিলেন এবং সম্প্রতি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেছিলেন।তার মৃত্যু ঘটেছে এমন এক সময়, যখন মাত্র একদিন আগেই তিনি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে ইস্টার শুভেচ্ছা বিনিময় করেছিলেন। এর আগে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন প্রত্যাবাসন নীতিকে ঘিরে পোপ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল।এপির তথ্য অনুযায়ী, ভ্যাটিকান হোটেলের এক রিসেপশন কক্ষে পোপ ফ্রান্সিস ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্সকে সাক্ষাৎ দেন। এ সময় তিনি ভ্যান্সের সন্তানদের জন্য তিনটি চকোলেট ইস্টার ডিম, একটি ভ্যাটিকান টাই এবং কিছু রোজারি উপহার দেন।গতকাল রোমের সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে ইস্টার মাস উদযাপিত হলেও, পোপ তা অন্য এক কার্ডিনালের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।বুয়েন্স আয়ার্সে জন্মগ্রহণকারী হোর্হে মারিও বেরগোলিও ১৯৫৮ সালে এক গুরুতর অসুস্থতা থেকে সুস্থ হয়ে উঠার পর যাজক জীবন বেছে নেন। ১৯৬৯ সালে তিনি পুরোহিত হিসেবে অভিষিক্ত হন এবং ১৯৯৮ সালে বুয়েন্স আয়ার্সের আর্চবিশপ নিযুক্ত হন। ২০০১ সালে তিনি কার্ডিনাল নির্বাচিত হন।২০১৩ সালে পোপ বেনেডিক্ট ষোড়শ-এর পদত্যাগের পর অনুষ্ঠিত প্যাপাল কনক্লেভে তাকেই পোপ হিসেবে নির্বাচন করা হয়। তিনি ‘ফ্রান্সিস’ নামটি বেছে নেন সেন্ট ফ্রান্সিস অব অ্যাসিসির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে।পোপ হিসেবে তার সময়কালে তিনি ক্যাথলিক চার্চের আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক অবস্থানকে তুলে ধরেন, বিশেষ করে ভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব, পুঁজিবাদের সমালোচনা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতার মধ্য দিয়ে তিনি আলাদা পরিচিতি লাভ করেন।
