‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন মানলে আরাকান আর্মির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি জোরাল হবে’


‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন মানলে আরাকান আর্মির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি জোরাল হবে’

২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ছয় দফায় মিয়ানমার সরকারের কাছে ৮ লাখ রোহিঙ্গার তালিকা হস্তান্তর করে প্রত্যাবাসনের জন্য। কিন্তু এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি মিয়ানমার।

সম্প্রতি থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউ থান সোয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় জানান, ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য যোগ্য।

এই ঘোষণার পর কূটনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যন্ত নানা প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, রাখাইন এখন আর মিয়ানমার সামরিক জান্তার নিয়ন্ত্রণে নেই। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন কীভাবে সম্ভব? অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রকৃত পদক্ষেপ না নিয়ে মিয়ানমার হয়তো আবারও ‘নতুন এক নাটক’ মঞ্চস্থ করছে।

ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও বৈশ্বিক রোহিঙ্গা অধিকারকর্মীদের নেটওয়ার্কের অন্যতম মুখপাত্র নেই সান লুইন কথা বলেছেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সাম্প্রতিক অগ্রগতি ও মিয়ানমার জান্তা সরকারের সঙ্গে স্থানীয় শক্তি আরাকান আর্মির দ্বন্দ্ব নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন যু আন্তর্জাতিক বিভাগের সহ-সম্পাদক আবদুল মজিদ চৌধুরী।

অনলাইন: দীর্ঘদিন ধরেই মিয়ানমারের সামরিক জান্তা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে কথা বলছে, তবে বাস্তবে তা আন্তর্জাতিক চাপ মোকাবিলায় সময়ক্ষেপণের কৌশল হিসেবেই দেখা গেছে। এখন তারা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গার নাম চূড়ান্ত করেছে বলে জানিয়েছে। অথচ এখনো রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের অধিকার অস্বীকার করা হচ্ছে, এবং তাদের অন্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে চলাফেরার স্বাধীনতাও মারাত্মকভাবে সীমিত। বর্তমানে রাখাইন অঞ্চল জান্তার নিয়ন্ত্রণে নেই বললেই চলে। এই প্রেক্ষাপটে জান্তা সরকারের ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গার নাম চূড়ান্ত ঘোষণার মূল কারণ কী হতে পারে?

নেই সান লুইন: জান্তা সরকারের কখনোই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রকৃত কোনো সদিচ্ছা ছিল না। বিগত কয়েক বছর ধরে তারা যে সব প্রক্রিয়া দেখিয়েছে, সেগুলো ছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখে নিজেকে সহযোগী হিসেবে উপস্থাপন করার প্রচেষ্টা মাত্র। সম্প্রতি তারা দাবি করেছে যে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা যাচাই-বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত, কিন্তু কীভাবে এই প্রত্যাবাসন হবে সে সম্পর্কে তারা কোনো স্পষ্ট তথ্য দেয়নি।

আসলে যেহেতু জান্তার এখন আর অঞ্চলটির উপর নিয়ন্ত্রণ নেই, তাই এই ঘোষণার বাস্তবায়ন হওয়ার সম্ভাবনাও নেই বললেই চলে। সবকিছু নির্ভর করছে কে আসলে রাখাইনে নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে, তার উপর।

এটা এক ধরনের বার্তাও হতে পারে বাংলাদেশের প্রতি: ‘আমরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে রাজি। যদি আপনি তাদের ফিরিয়ে দিতে চান, তাহলে অনুগ্রহ করে আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে কথা বলুন। ’

অনলাইন: প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন যাচাইয়ের জান্তার অনুরোধ আরাকান আর্মি (এএ) প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলছে, রাখাইনে জান্তার কোনো কর্তৃত্ব নেই এবং বাংলাদেশের উচিত স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা। পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের অবস্থান কী হওয়া উচিত?

নেই সান লুইন: যেহেতু রাখাইন অঞ্চলে জান্তার নিয়ন্ত্রণ নেই, তাই বাস্তবিক দিক থেকে বাংলাদেশের উচিত সেই শক্তির সঙ্গে আলোচনায় যাওয়া, যাদের হাতে বর্তমানে বাস্তব নিয়ন্ত্রণ রয়েছে—এক্ষেত্রে তা হচ্ছে আরাকান আর্মি (এএ)। বাংলাদেশের সরকার ইতোমধ্যে এএ’র সঙ্গে যোগাযোগে রয়েছে—যদিও এটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত নয়, কিন্তু ব্যাপকভাবে জানা বিষয়।

এখনই উপযুক্ত সময় রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ নিজ গ্রামে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা শুরু করার। যেহেতু আরাকান বা রাখাইন রাজ্য এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমারেরই অংশ, তাই জান্তা সরকারও এতে আপত্তি জানাবে না বলেই ধারণা করা যায়—বিশেষ করে তারা যখন ইতোমধ্যেই বলেছে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা যাচাই-বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ফেরার উপযোগী।

অনলাইন: রাখাইনে এখন পর্যন্ত আরাকান আর্মি ‘রোহিঙ্গা’ শব্দ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং অনেক রাখাইন মানুষ মনে করে, রাখাইন রাজ্যে কোনো রোহিঙ্গার অস্তিত্বই থাকা উচিত নয়। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘদিনের বৈরিতা রয়েছে। এখন যদি রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে রাখাইনে ফিরে আসে, তাদের কি আদৌ স্বাগত জানানো হবে?

নেই সান লুইন: আরাকান আর্মি (এএ) বা কিছু রাখাইন জনগণের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যেসব বক্তব্য উঠে আসে, তা বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে না। আরাকান একটি ভাগাভাগির ভূমি—এর পক্ষে ঐতিহাসিক প্রমাণ অত্যন্ত শক্তিশালী। এই সত্য অস্বীকার করা মানে বিভক্তির পথ প্রশস্ত করা। ইতিহাসকে মুছে ফেলা যায় না, বরং এখনই সময় বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার। অস্ত্রের জোরে এই সত্য চাপা দেওয়ার চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত তাদের নিজেদের মর্যাদাই ক্ষুণ্ন হবে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের নিপীড়ন বন্ধ করা উচিত।

রোহিঙ্গাদের স্বাগত জানানো ও সমাজে অন্তর্ভুক্ত করাই হবে আরাকানকে নতুন করে গড়ে তোলার পথ। তাদের প্রত্যাবর্তন এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। আজ যদি প্রত্যাবাসন অস্বীকার করা হয়, আগামী দিনে তা বাস্তবায়ন করতেই হবে। তাই এখনই এই সমস্যার সমাধান করাই হবে সবচেয়ে যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত।

অনলাইন: আরাকান আর্মি (এএ) ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’-এর একটি অংশ। অতীতে এএ ও এই জোট দাবি করেছিল, তারা ভবিষ্যতে রাখাইনে সব সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করবে। কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মতোই এখন আরাকান আর্মিও রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে। আরাকান আর্মি নেতৃত্বের পক্ষ থেকেও রোহিঙ্গা মুসলমানদের ‘বাংলাদেশি অভিবাসী’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। অনেকেই আশা করেছিল, আরাকান আর্মি যদি রাখাইনে সেনা সরকারকে পরাজিত করতে পারে, তাহলে রোহিঙ্গাসহ তবে বহু বছর ধরে বৈষম্য ও সহিংসতার শিকার সব জাতিগোষ্ঠীর অধিকার—নিশ্চিত হবে। এখন সেই প্রত্যাশা ধাক্কা খেয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে—আরাকান আর্মি কেন তাদের পূর্বের অন্তর্ভুক্তিমূলক অবস্থান থেকে সরে আসছে?

নেই সান লুইন: আরাকান আর্মি (এএ) যখন ক্ষমতা ও প্রভাব বাড়াচ্ছিল, তখন তারা রোহিঙ্গা ইস্যুকে কাজে লাগিয়েছে আন্তর্জাতিক সহানুভূতি ও সমর্থন অর্জনের জন্য। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আমাদের মতো রোহিঙ্গা কর্মীরাসহ অনেকেই বিশ্বাস করেছিলাম, আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের প্রতি সদিচ্ছা পোষণ করে। কিন্তু তারা যখন বাস্তবিক অর্থে এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করল, তখন তাদের আসল মনোভাব প্রকাশ পেতে শুরু করল। এখন তারা রোহিঙ্গাদের উপর এমনই নির্যাতন চালাচ্ছে, যা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অপরাধের সঙ্গে তুলনীয়।

তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, জবাবদিহি ও পুনর্মিলন একসাথে এগোতে হবে। অতীতের সব অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিত করাও জরুরি, আবার শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভবিষ্যতের জন্য একসঙ্গে এগোনোও দরকার।

অনলাইন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আরও একটি বড় প্রশ্ন উঠেছে—মিয়ানমারের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর আসলে কতটা আগ্রহ আছে রোহিঙ্গাদের ফিরে আসার ব্যাপারে? এ বিষয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী?

নেই সান লুইন: আমি মনে করি না, মিয়ানমারের অন্যান্য অঞ্চলভিত্তিক সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিরোধিতা করবে। রোহিঙ্গা সংকট দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোর একটি। তাই অনেক বিদ্রোহী গোষ্ঠী যারা নিজেরাও নিপীড়নের শিকার, তারা এই প্রশ্নে এক ধরনের সহানুভূতিশীল অবস্থান নিতে পারে।

রোহিঙ্গা ইস্যু কেবল রাখাইনের সমস্যা নয়—এটি গোটা মিয়ানমারের একটি জাতীয় সংকট, যা সর্বত্রই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে স্বাগত জানানো হবে বলেই আমি মনে করি।

অনলাইন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে বর্তমানে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (PDF), ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (NUG) এবং অন্যান্য জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর (EAOs) অবস্থান কী?

নেই সান লুইন: ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (NUG) ২০২১ সালের জুন মাসে ঘোষণা দিয়েছিল যে তারা রোহিঙ্গাদের স্বাগত জানাবে। তবে সাম্প্রতিক যেসব অগ্রগতি বা ঘটনাপ্রবাহ ঘটেছে, সেগুলো নিয়ে তারা এখনও কোনো মন্তব্য করেনি। পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (PDF) এবং অন্যান্য জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন (EAOs) এ নিয়েও নীরব রয়েছে। তারপরও আমি মনে করি, তারা রোহিঙ্গাদের ফিরে আসার বিরোধিতা করবে না।

অনলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায় এবং আগামী বছরের ঈদ নিজভূমি রাখাইনে উদযাপনের প্রত্যাশা করে। এই প্রেক্ষাপটে, ২০২৬ সালের ঈদের মধ্যে রোহিঙ্গাদের রাখাইনে প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা নিয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী? আপনি কীভাবে আগামী এক বছরে এই ইস্যুর অগ্রগতি কল্পনা করেন?

নেই সান লুইন: এই সমস্যার সমাধান দ্রুত সম্ভব—যদি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ সদিচ্ছা দেখায় এবং কার্যকরভাবে এগিয়ে আসে। আমি বিশ্বাস করি, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যা বলেছেন তা সম্ভব, বিশেষ করে যদি বাংলাদেশ সরকার সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেয়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আরাকান আর্মি (এএ) বাংলাদেশের সঙ্গে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়—তাদের নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই। যদি বাংলাদেশ সরকার ও আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছায় এবং সেই সমঝোতা রোহিঙ্গাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটায়, তাহলে এ প্রক্রিয়া এগিয়ে যেতে পারে। সব শর্ত যদি পূরণ হয়, তাহলে ২০২৬ সালের ঈদের আগেই কিছু রোহিঙ্গার আরাকানে প্রত্যাবর্তন সম্ভব হতে পারে।

অনলাইন: রোহিঙ্গা সংকট অনেকটা ‘ভুলে যাওয়া’ সংকটে পরিণত হয়েছিল। জাতিসংঘ মহাসচিবের সাম্প্রতিক কক্সবাজার সফর এবং বৈশ্বিক তহবিল ঘাটতির প্রেক্ষাপটে আপনি কি মনে করেন, এই পরিস্থিতি মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও আরাকান আর্মির ওপর চাপ বাড়াবে? বিশেষ করে যখন এই দুপক্ষই রোহিঙ্গাদের রাখাইন রাজ্যের অধিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চায় না।

নেই সান লুইন: রোহিঙ্গা ইস্যুটি প্রায় বিস্মৃত হয়ে গিয়েছিল, তবে জাতিসংঘ মহাসচিবের সাম্প্রতিক সফর এটিকে আবারও আন্তর্জাতিক আলোচনায় ফিরিয়ে এনেছে। তার সফরের একটি তাৎপর্যপূর্ণ ফল হলো, রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তার বরাদ্দ কিছুটা হলেও পুনঃস্থাপিত হয়েছে—যা একটি ইতিবাচক দিক। এ উদ্যোগের কৃতিত্ব বাংলাদেশ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাপ্য।

তবে সামরিক জান্তা বাস্তবে কোনো চাপ অনুভব করছে না। তারা এই পরিস্থিতিকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে এই অজুহাতে যে, এখন আর তারা ওই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণে নেই। অন্যদিকে, আরাকান আর্মি (এএ), যারা নিজেদের ‘রাজনৈতিক স্বীকৃতি’ পাওয়ার পথে এগিয়ে নিতে চাইছে, তারা জাতিসংঘ মহাসচিবের বক্তব্যে উল্লেখ পাওয়ার মাধ্যমে কিছুটা বৈধতা অর্জন করেছে।

এখন এএ’র জন্য একটি সুযোগ এসেছে—তারা যদি রোহিঙ্গা ইস্যুর সমাধানে যুক্ত হয়, তাহলে তাদের স্বীকৃতির সম্ভাবনা আরও জোরালো হবে। রোহিঙ্গাদের উপর নিপীড়ন চালিয়ে বা তাদের অস্তিত্ব অস্বীকার করে এএ লাভবান হতে পারবে না। বরং এ সংকট সমাধানে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করলে সেটি তাদের ভবিষ্যৎ ও কৌশলগত স্বার্থের পক্ষে যাবে।

রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ছবি: সংগৃহীত
অনলাইন: মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার প্রায় সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এমনকি মিয়ানমারের পূর্ববর্তী অং সান সূচির সরকারও রোহিঙ্গাদের দেশটির ১৩৫টি স্বীকৃত জাতিগত গোষ্ঠীর মধ্যে গণ্য করেনি। বর্তমানে রাখাইন রাজ্য প্রায় পুরোপুরি আরাকান আর্মির (এএ) নিয়ন্ত্রণে। এখন কি আমরা বলতে পারি, মিয়ানমার জান্তা নয়, রোহিঙ্গাদের ভাগ্য এএ’র হাতে? তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং নীতিই শেষ পর্যন্ত এই বিষয়টি নির্ধারণ করবে?

নেই সান লুইন: আরাকান বা রাখাইন রাজ্য এখনো মিয়ানমারের একটি অংশ। যদিও সামরিক জান্তাকে মিয়ানমারের অধিকাংশ জনগণ অবৈধ সরকার হিসেবে বিবেচনা করে, তারা সম্প্রতি কিছু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে, প্রতিবেশী দেশগুলো এবং রাশিয়ার সমর্থন পেয়ে।

এদিকে, আরাকান আর্মি (এএ) বড় অংশে এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং বর্তমানে আরাকানে শক্তিশালী একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। তবে, এর মানে এই নয় যে, রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যত শুধুমাত্র এএ’র হাতে। পরিস্থিতি অনিশ্চিত এবং যেকোনো সময় পরিবর্তিত হতে পারে।

আমরা, রোহিঙ্গারা, মিয়ানমারের একটি জাতিগত গোষ্ঠী হিসেবে, বিশেষ করে আরাকানে গভীর ইতিহাসসম্পন্ন জনগণ হিসেবে, আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারী। আমরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে নিপীড়ন এবং গণহত্যার শিকার হয়েছি। আজ হয়তো আমাদের শক্তি কম, কিন্তু এর মানে এই নয় যে, আমরা সবসময় দুর্বল থাকব। আমাদের অধিকার অস্বীকার করে চলা কেবল আমাদের সংকল্পকে আরো শক্তিশালী করবে এবং আমরা যা প্রাপ্য তা অর্জন করতে আরও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হব।

এটি একটি সমাধান পাওয়ার জন্য আমাদের বর্তমান সুযোগগুলো ব্যবহার করা ভালো, বরং এ সমস্যাটি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছাতে দেওয়া যা ভবিষ্যতে আরো কঠিন হয়ে উঠবে।

অনলাইন: রাখাইন অঞ্চলে বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য একটি চ্যানেল (করিডর) প্রতিষ্ঠার আলোচনা চলছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং আরাকান আর্মির চলমান সংঘাতের মধ্যে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। আপনি কি মনে করেন, যদি এমন একটি চ্যানেল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন স্থায়ীভাবে বাধাগ্রস্থ হবে?

নেই সান লুইন: রাখাইনে শুধু রোহিঙ্গারা নয়, রাখাইন এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠী সবাই কষ্ট পাচ্ছে। সবারই মানবিক সহায়তার প্রয়োজন। আমি বিশ্বাস করি না, বাংলাদেশে মাধ্যমে সহায়তা পাঠানোর চ্যানেল তৈরি হলে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার অধিকারকে প্রভাবিত করবে।

এছাড়া আরাকান আর্মিকে (এএ) অবশ্যই বাংলাদেশ দিয়ে জাতিসংঘকে এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে। জাতিসংঘের উপস্থিতি মানবিক সহায়তা বিতরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আরও আক্রমণ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করতে পারে।

এছাড়া, রাখাইনে যদি জাতিসংঘ উপস্থিত থাকে, তাহলে রোহিঙ্গারা নিজেকে আরও নিরাপদ মনে করবে। এটি বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীকে তাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করতে পারে।

অনলাইন: আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্তি, আমানবিক নির্যাতন, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, এবং এমনকি একটি ড্রোন হামলার অভিযোগ রয়েছে, যাতে কমপক্ষে ২০০ রোহিঙ্গা নিহত হয়। কিছু প্রতিবেদন বলছে, অনেক রোহিঙ্গা কক্সবাজার ক্যাম্প ছেড়ে মিয়ানমারে ফিরে যাচ্ছে এবং আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর পক্ষে লড়াই করছে। তাহলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের জন্য আশার আলো কোথায়?

নেই সান লুইন: আরাকান আর্মি (এএ) রোহিঙ্গাদের নির্যাতনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মতো একই প্যাটার্ন অনুসরণ করেছে। ২০২৪ সালের মার্চ থেকে আগস্টের মধ্যে তারা অন্তত ২৫০০ রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে এবং বহু রোহিঙ্গা গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে। নির্যাতনের মাত্রা খুবই ভয়াবহ, যা বর্ণনা করা কঠিন এবং এটি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের চেয়েও অনেক বেশী।

এদিকে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা যুবকদের জোরপূর্বক সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করছে। কিছু তথাকথিত সশস্ত্র গ্রুপ, যারা রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব করার দাবি করছে, তারা নিজেদের স্বার্থে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করছে। এই দলগুলো রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে না।

সবকিছুর পরেও, দায়বদ্ধতা এবং পুনর্মিলনী একসঙ্গে হতে হবে। রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমি আরাকানে, এবং তাদের ফিরে যাওয়ার অধিকার রয়েছে। এটি দেরি না করে এখন সমাধান করা উচিত।
অনলাইন: রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ঝুঁকিপূর্ণ আশ্রয়ে বসবাস করছে, যেখানে নিরাপত্তা অপ্রতুল এবং শরণার্থী শিবিরে আইনের প্রয়োগ খুব কম, জবাবদিহিতাও নেই। মাসের পর মাস এবং বছরের পর বছর এই পরিস্থিতিগুলো এভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে। যদি এই অনিশ্চয়তা অব্যাহত থাকে, তাহলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের ভবিষ্যত কি হবে? চূড়ান্তভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনার কথা কি আমাদের ভুলে যাওয়া ‍উচিত?

নেই সান লুইন: রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমি রাখাইন বা আরাকানে। আমাদের প্রতিদিন তাদের এই মাতৃভূমিতে ফিরে আসার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। আমাদেরকে তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার উপায় খুঁজে বের করতে হবে, কারণ এটি চূড়ান্ত সমাধান।

এদিকে, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আরও ভালো জীবনযাপনের অধিকারী। শুধুমাত্র সহায়তার উপর নির্ভর না করে, তাদেরকে সঠিক শরণার্থী অধিকার দেওয়া উচিত। তাদেরকে কাজ করতে দেওয়ার সুযোগ এবং ক্যাম্পের আশেপাশে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করলে বাংলাদেশের অর্থনীতি বৃদ্ধি পাবে এবং আতিথেয়তাকারী সম্প্রদায়ও লাভবান হবে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশকে ঘনিষ্ঠভাবে সমর্থন করতে হবে, যাতে রোহিঙ্গারা তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদে ফিরতে পারে এবং আরাকান পুনর্নির্মাণে সহায়তা পায়। রোহিঙ্গারা যেখানে থাকুক না কেন, তারা শান্তি ও মর্যাদায় জীবন যাপন করতে চায়।

অনলাইন: বাংলাদেশ সফরের সময় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগণের অধিকার পূর্ণভাবে সম্মানিত করার জন্য আরাকান আর্মির সাথে সংলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘এটা প্রয়োজনীয় যে একটি সংলাপ অনুষ্ঠিত হোক।’ আপনি কি মনে করেন, আরাকান আর্মি (এএ) প্রতিক্রিয়া জানাবে? যদি এমন কোন আলোচনা হয়, তবে আরাকান আর্মি কী ধরনের শর্তা দিতে পারে?

নেই সান লুইন: জাতিসংঘের মহাসচিব যা বলেছেন, তা আরাকান আর্মির (এএ) জন্য কিছুটা বৈধতা এবং স্বীকৃতি প্রদান করেছে। যদি আরাকান আর্মি প্রকৃতপক্ষে আন্তর্জাতিক বৈধতা এবং স্বীকৃতি চাই, তবে তাদের রোহিঙ্গাদের গ্রহণ এবং তাদের স্বাগত জানাতে মনোনিবেশ করা উচিত। জাতিসংঘ মহাসচিবের মন্তব্য মূলত রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে করা হয়েছিল, এবং এটিকে তাই বোঝা উচিত।

মিয়ানমারের অন্যান্য অনেক জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব অঞ্চলের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখে, তবে জাতিসংঘ মহাসচিব তাদের বৈধতা সমর্থন করেননি। তবে এএ তার আঞ্চলিক সম্পর্ক এবং রোহিঙ্গাদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে স্বীকৃতি পেয়েছে।
অনলাইন: বাংলাদেশ আসিয়ানের সদস্য হতে চায়। যদি বাংলাদেশ এর সদস্য হয়, তবে কি রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারবে? মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ বিমসটেক-এর মতো আঞ্চলিক সংগঠনের সদস্য, তবে গত বিমসটেক সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কেউ তেমনভাবে এই বিষয়টি উত্থাপন করেনি।

নেই সান লুইন: যদি বাংলাদেশ আসিয়ানে যোগ দেয়, তাহলে এটি আঞ্চলিক ক্ষেত্রে আসিয়ান পরিবারে বাংলাদেশের প্রভাব বাড়াবে। তবে, এখনকার পরিস্থিতিতে এটি সম্ভব নয়। তবুও, বাংলাদেশ এখনও সব আসিয়ান সদস্য দেশের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে। বাংলাদেশ ১৯৭৮ সাল থেকে রোহিঙ্গা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে এবং বর্তমানে ১.২ মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। যতটা সম্ভব বাংলাদেশকে এটি একটি বড় সমস্যা হিসেবে তুলে ধরতে হবে।

বিশেষ করে মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া, আসিয়ানের অন্তর্ভুক্ত। দুটি দেশই রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। বাংলাদেশকে এই দেশগুলোকে নিয়ে রোহিঙ্গাদের সমর্থনকারী একটি জোট গঠন করা উচিত, যাতে তারা এই সমস্যার সমাধানে অবদান রাখতে পারে।

অনলাইন: প্রায়শ আরাকান আর্মি বাংলাদেশের জেলে এবং নৌকা জিম্মি করে রাখছে। এর মাধ্যমে আরাকান আর্মি কি বাংলাদেশ সরকারকে কোনো বার্তা দিতে চাইছে? আপনার মতে, রোহিঙ্গাদের রাখাইনে প্রত্যাবর্তন নিয়ে, আরাকান আর্মির সঙ্গে বাংলাদেশের কেমন ধরনের সমঝোতা গঠন করা উচিত?

নেই সান লুইন: কোনোভাবেই বাংলাদেশের কাউকে জিম্মি করার পথ বেছে নেওয়া উচিত নয় আরাকান আর্মির। গোষ্ঠীটিকে তাদের দুর্বলতাগুলো মেনে নিতে হবে। তাদের বুঝতে হবে সশস্ত্র শক্তি সব সমস্যার সমাধান করে না; কখনও কখনও এটি আরও বেশি সমস্যার সৃষ্টি করে।

যেহেতু এএ-এর বাংলাদেশে ভালো সম্পর্ক রয়েছে, তাই এটি শান্তিপূর্ণভাবে সব সমস্যা সমাধানের দিকে এগিয়ে যেতে উচিত। যদি বাংলাদেশ তাদের দরজা বন্ধ করে দেয়, তবে আরাকান বড় ধরনের দুর্দশার মুখোমুখি হবে।

আমি দেখেছি, বাংলাদেশ আরাকান আর্মির প্রতি খুব সহানুভূতিশীল এবং রাখাইন রাজ্যের মঙ্গলের জন্য চিন্তা করে। আরাকান আর্মিকে এটি উপলব্ধি করতে হবে। বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং রাখাইন বর্তমানে একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এটি বাস্তবতা। যদি বাংলাদেশ রাখাইনকে সমর্থন না দেয়, পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। যদি আরাকান আর্মি সব দৃষ্টিকোণ থেকে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে, বেশিরভাগ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে।

অনলাইন: বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ইউরোপে অভিবাসী সঙ্কট, আমেরিকায় ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখনও চলছে। আপনি কি মনে করেন, বৈশ্বিক নানা সংকট সত্ত্বেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিকট ভবিষ্যতে সম্ভব হবে?

নেই সান লুইন: বিশ্বব্যাপী সংকট রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে বাধা সৃষ্টি করা উচিত নয়। সব সংকটই এক সময় না এক সময় সমাধান করতে হবে, এবং রোহিঙ্গা সংকট তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানযোগ্য একটি সমস্যা। এই সমস্যাটির সমাধান করা হলে অন্যান্য সমস্যাগুলোর পরিমাণও কমে যাবে।

বিশ্বব্যাপী সংকটের মাঝেও, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন এখনই সম্ভব হওয়া উচিত। বৈশ্বিক সংকটের কারণে এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গাকে আরও বেশি সময় ধরে কষ্ট ভোগ করতে দেওয়া উচিত নয়।