উপজেলা পরিষদ নির্বাচন


৮ মে প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী শুরু হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। মাঠপর্যায়েও তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। মুশকিল হয়েছে, এ নির্বাচনকে ঘিরে বরাবরের মতো স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। মঙ্গলবার খবরে প্রকাশ-শীর্ষ পর্যায়ের কঠোর নির্দেশনা ও হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাবমুক্ত রাখা যাচ্ছে না। মূলত দলীয় প্রতীক নৌকা না থাকায় এবং বিএনপি অংশ না নেওয়ায় এ নির্বাচনে সরকারদলীয় প্রার্থীদের আধিক্য লক্ষ করা যাচ্ছে। তারা নিজ বলয়ের নেতা, নিকটাত্মীয় ও স্বজনদের প্রার্থী করছেন। আবার সংসদ নির্বাচনে যারা অংশ নেননি কিংবা চেয়ারম্যান পদ ছেড়েছিলেন, তারাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এর বাইরেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারাও নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন, সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। এখানে এমপি-মন্ত্রী বা দলীয় প্রভাবশালী নেতারা হস্তক্ষেপ করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বাস্তব চিত্র বলছে অন্য কথা। নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে অনেক এমপি-মন্ত্রী ও প্রভাবশালী নেতা ইতোমধ্যেই নানা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনি মাঠ গরম করছেন। কোথাও কোথাও একক প্রার্থী রাখারও জোর চেষ্টা চলছে। উঠেছে বিরোধী পক্ষকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগও। আমরা মনে করি, নির্বাচনের প্রতিটি ধাপেই প্রচার-প্রচারণা ও ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠানে ইসির কঠোর ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত। এ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে ইসি তার ইতিবাচক ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। অন্যদিকে, নির্বাচনে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীদের দলের শীর্ষ নেতাদের পরামর্শ মেনে চলা উচিত। এর ব্যত্যয় ঘটলে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হতে পারে। এতে ভোট গ্রহণের দিন দলের অভ্যন্তরেই সংঘাত-সহিংসতা ঘটার আশঙ্কা সত্যে পরিণত হতে পারে। নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ইসি এবং ক্ষমতাসীন দল কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, এটাই প্রত্যাশা।