বিশ্ব আবহাওয়া দিবস আজ


বিশ্ব আবহাওয়া দিবস আজ। আবহাওয়া ও জলবায়ুর গুরুত্ব তুলে ধরতে বাংলাদেশসহ বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ১৯৩টি সদস্য দেশ ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে দিবসটি পালিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য-‘এট দ্য ফ্রন্টলাইন অব ক্লাইমেট অ্যাকশন’। আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনে অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হিসাবে সমুদ্রের ভূমিকা রয়েছে। তাই মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে উৎপন্ন অতিরিক্ত তাপ প্রশমন, সামুদ্রিক ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসসহ আবহাওয়া পরিবর্তনে এর প্রভাব এবং আবহাওয়া ও জলবায়ুর পূর্বাভাসে এ প্রভাবের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবার প্রতিপাদ্যে জলবায়ুকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আবহাওয়া ও জলবায়ু সংক্রান্ত সেবা দ্রুততার সঙ্গে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। জাতিসংঘ ঘোষিত আবহাওয়া ও জলবায়ু সংক্রান্ত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরে আধুনিক কারিগরি ও প্রযুক্তি সন্নিবেশ করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আওয়ামী লীগ সরকার বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে সরকার জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিয়ে ১০০ বছর মেয়াদি বদ্বীপ পরিকল্পনা, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। ভৌগোলিক অবস্থান, পূর্ব আবহাওয়ার ইতিহাস, তাপমাত্রা, বায়ুচাপ, বায়ুর আর্দ্রতা, জলবায়ু, প্রাকৃতিক পরিবেশ, বনাঞ্চলের পরিমাণ ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ ও প্রাপ্ত উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিদ্যমান আবহাওয়া ও অদূর ভবিষ্যতের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়ে থাকে। বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা সনাতন ও ডিজিটাল দুই পদ্ধতিতেই কাজ করেন। সম্প্র্রতি প্রযুক্তি যোগ হয়েছে। এখন ইন্টিগ্রেটেড হাই পারফরম্যান্স কম্পিউটিং সিস্টেমে আগামী অন্তত ১০ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে পারে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর। সারা দেশে অর্ধশতাধিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। সেখান থেকে প্রতি তিন ঘণ্টা পরপর বাতাসের বেগ, তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, মেঘের গতি ও তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় রাত-দিন। সেই তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে পূর্বাভাস প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু অনেক সময় এই পূর্বাভাস সঠিক হয় না। আবহাওয়া অফিসের দেয়া বৃষ্টি ও তাপমাত্রা ধারণা অনেক সময় উলটো হয়। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের ব্যবস্থা নিয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে সারা দেশে বিভিন্ন কেন্দ্রে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম বলেন, আমরা দিনে দুইবার আবহাওয়ার আপডেট দিয়ে থাকি। প্রতি আপডেটে আমরা আগামী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাস দিয়ে থাকি। এছাড়া ৩ দিনের আবহাওয়া পরিস্থিতি নিয়ে ধারণা দিয়ে থাকি। অনেক সময় এই ধারণা সঠিক হয় না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, দেখুন এক ঘণ্টা পর আবহাওয়া কি হবে আমরা বলতে পারি না। যে কোনো মুহূর্তে পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে। তবে আমরা যন্ত্রের সাহায্যে আবহাওয়ার পূর্বাভাস বা ধারণা দিয়ে থাকি। যা ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ কার্যকর হয়ে থাকে।