জনগণের রক্তচুষে টাকার পাহাড় গড়েছে আ.লীগের এমপি-মন্ত্রীরা: ফখরুল


বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বড় বড় গাড়ি বাড়ি করেছে আওয়ামী লীগের লোকেরা। জনগণের রক্তচুষে তারা টাকার পাহাড় গড়েছে। এমপি-মন্ত্রীরা ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। এসবের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে রোববার বিকালে পদযাত্রা কর্মসূচির অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা জেলা বিএনপি এ পদযাত্রার আয়োজন করে। এতে ঢাকা জেলার ১০টি ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন। দুপুর ২টায় পদযাত্রা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১০টা থেকেই বিভিন্ন উপজেলার নেতাকর্মীরা মিছিলসহকারে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে নবাবগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন। বিকাল সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শহিদ মিনারে এলে হাজার হাজার নেতাকর্মী তাকে স্লোগানে স্বাগত জানান। ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই, গুম-খুনে দেশ আজ দিশেহারা। দিনের ভোট রাতে করে এ সরকার জনগণকে বোকা বানাতে চেষ্টা করছে। আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য, আমাদের অস্তিতের জন্য লড়াই করতে হবে। তিনি আরও বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশান্তর করা হয়েছে। আমাদের প্রায় ৫ হাজার নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। কথায় কথায় মামলা দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখা হচ্ছে। মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ বলছে দেশে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে; কিন্তু এ সংবিধান তো তারা বানিয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে রক্ষা করতে হবে। তাই এখনই সময় ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ অবৈধ সরকারের পতন ঘটাতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য লড়াই করছে না। দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করতে আন্দোলন করছে। এ সরকারকে হটাতে না পারলে দেশের মানুষের দুর্ভোগ কমবে না। আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মীদের দিয়ে সিন্ডিকেট করে মিনিটে মিনিটে দ্রব্যমূল্য বাড়াচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মানুষের শ্রমের টাকা লুটে নিয়ে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলেই ডিজিটাল নিরাপত্তার নামে ফাঁদ তৈরি করে মামলা দিচ্ছে। আমাদের দলের কয়েক লাখ নেতাকর্মীর নামে লাখ লাখ মামলা দিয়ে আন্দোলন থামিয়ে রাখার পাঁয়তারা করছে। আওয়ামী লীগ সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, তৈরি হন সময় এসেছে। জনগণের বাংলাদেশ গড়তে তাদের ভোট ও ভাতের অধিকার, মানবাধিকার রক্ষা করতেই আজ আমাদের এ শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা। তরুণ প্রজন্মকে আহবান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সামনে এগিয়ে আসুন। পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিতে হবে। ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে পরাজিত করতে হবে। ৫২ থেকে ৯০ পর্যন্ত সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তরুণ সমাজই নেতৃত্ব দিয়েছে। এ সময় মহিলা দলের কেন্দ্রীয় নেত্রী শিরিন সুলতানা বলেন, শেখ হাসিনা সরকারকে পতন ঘটাতে হবেই। তিনি অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার আবার পাঁয়তারা করছেন, তবে তা আর কোনো দিনই হবে না। ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে সব আউলিয়া, দেশ করেছে দেউলিয়া। তাদের হটিয়ে জনগণের সরকার গড়তে হবে। তিনি আরও বলেন, পুলিশ আর সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না। জনগণের জয় নিশ্চিত করেই বিএনপি নেতাকর্মীরা ঘরে ফিরবেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সাবেক এমপি সালাউদ্দিন আহমেদ বাবু, ঢাকা জেলা সহ-সভাপতি শাহ খন্দকার মাইনুল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ইরফান আমান অমি, ধামরাইয়ের সভাপতি তমিজ উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন মাস্টার, রেজাউল কবির পল, শামীমা রাহিম, আব্দুল হাই পান্নু, খন্দকার আবুল কালাম, হারুনুর রশিদ ওসমানী, নজরুল ইসলাম মেছের, মাসুদ পারভেজ, মনিরুজ্জামন পবন, আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, মাহবুবুর রহমান পান্নু, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন, অ্যাডভোকেট খলিলুর রহমান, দুর্জয় মাহমুদ সোহেল প্রমুখ।