আজারবাইজানি বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ইউক্রেনের দিকে আঙুল রুশ বিমান প্রধানের


বুধবার কাজাখস্তানের আকতাও শহরে আজারবাইজানের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় অন্তত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়। যার পেছনে রুশ বিমান বাহিনীর দায় দেখছেন অনেকেই। তবে তা মানতে নারাজ রুশ বিমান বাহিনীর প্রধান। তিনি বরং ইউক্রেনের দিকে আঙুল তুলেছেন। তাদের দাবি, চেচনিয়া অঞ্চলে ইউক্রেন যখন ড্রোন হামলা চালাচ্ছিল, সেই সময় আজারবাইজানের একটি বিমান কাজাখস্তানের দিকে মোড় নেওয়ার আগে অবতরণের চেষ্টা করতে গিয়ে ধ্বসে পড়ে।তবে আজারবাইজানের এক আইনপ্রণেতা ও বহু বিমান বিশেষজ্ঞ বুধবারের বিমান দুর্ঘটনার দায় চাপিয়েছে রুশ বিমান প্রতিরক্ষার গোলাবর্ষণের উপর। যদিও এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি রাশিয়ার বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ রোজাভিয়াতসিয়ার প্রধান দমিত্রি ইয়াদরভ।আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের ‘এমব্রেয়ার ১৯০’ বিমানটি সে দেশের রাজধানী বাকু থেকে রুশ প্রজাতন্ত্রী চেচনিয়ার আঞ্চলিক রাজধানী গ্রজনির দিকে উড়ে যাচ্ছিল, তবে কাসপিয়ান সাগর বরাবর কাজাখস্তানের আকতাউ-তে এটি বাঁক নেয় এবং অবতরণের চেষ্টা করতে গিয়ে ভেঙে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় ৩৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং বাকি ২৯ জন প্রাণে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিই আহত হয়েছেন।এই বিমান দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ কী, তা নিয়ে আজারবাইজান, কাজাখস্তান ও রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে, কেননা এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত হতে চলেছে। তবে আজারবাইজান সংসদের এক সদস্য রাসিম মুসাবেকভ সে দেশের সংবাদ সংস্থা তুরানকে বৃহস্পতিবার বলেছেন, গ্রজনির আকাশসীমায় থাকাকালীন বিমানে গুলি করা হয়েছে। তিনি রাশিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতেও বলেছেন।মুসাবেকভের বিবৃতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দমিত্রি পেসকভ এই বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করে বলেন, দুর্ঘটনার কারণ কী তা নির্ধারণ করার দায়িত্ব তদন্তকারীদের।পেসকভ সংবাদদাতাদের ডেকে এক সংবাদ সম্মেলন করে জানান, ‘বিমানের ঘটনা নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে এবং তদন্তের ফলস্বরূপ কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত না হওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে মূল্যায়ন করার অধিকার আমাদের রয়েছে বলে মনে করি না।’এদিকে রুশ বিমান বিভাগের প্রধান ইয়াদরভ বলেছেন, গ্রজনির ঘন কুয়াশার মধ্যে বিমানটি যেহেতু অবতরণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল এবং ইউক্রেনের একাধিক ড্রোন গ্রজনিকে নিশানা করেছিল, তাই কর্তৃপক্ষ বিমান চলাচলের জন্য এলাকাটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।ইয়াদরভ আরও বলেছেন, গ্রজনিতে অবতরণের দুইবার ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর বিমানচালককে বিকল্প হিসেবে অন্যান্য বিমানবন্দরে নামার সুযোগ দেওয়া হয়, তবে তিনি কাসপিয়ান সাগর বরাবর আকাতাউতে উড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গ্রজনি বিমানবন্দর এলাকার অবস্থা বেশ জটিল। এমন অনেক পরিস্থিতি রয়েছে যার জন্য যৌথ তদন্ত জরুরি।’আজারবাইজানের প্রসিকিউটর জেনারেলের দফতর এক বিবৃতিতে বলেছে, দুর্ঘটনার তদন্তের অংশ হিসেবে আজারবাইজানের একাধিক তদন্তকারী গ্রজনিতে কাজ করছেন।