নৌকা পেয়েও যে কারণে ধরাশায়ী মমতাজ


সদ্যসমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসনে (সিংগাইর-হরিরামপুর- সদরের ৩ ইউনিয়ন) নৌকার টিকিট পেয়েও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে কুপোকাত মমতাজ বেগম। স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর সঙ্গে ভোটযুদ্ধে হেরে গেছেন এই জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী। বিজয়ী প্রার্থী টুলু পেয়েছেন ৮৮ হাজার ৩০৯ ভোট। মমতাজ বেগম পেয়েছেন ৮২ হাজার ১৩৮ ভোট। ৬ হাজার ১৭১ ভোট কম পাওয়ায় এমপি নামের মুকুটটি তার দখল থেকে এখন টুলুর মাথায়। ভোটার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মমতাজের পরাজয়ের নেপথ্যে রয়েছে নানা কারণ। এর মধ্যে তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন, কমিটি গঠনে স্বেচ্ছাচারিতা, আত্মীয়করণ ও পদবাণিজ্য, নৌকা প্রতীকের নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানদের অসম্মান, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিনকে কটাক্ষ করে বক্তব্য প্রদান, এমপির বিশেষ বরাদ্দসহ টিআর কাবিখা, কাবিটা নামে-বেনামে লোপাট, বিতর্কিত ব্যক্তিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া এবং দীর্ঘ ১৫ বছরে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন না করা অন্যতম কারণ। সেই সঙ্গে এমপি মমতাজের পারিবারিক ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বও ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলে। নিজের অনুসারী কর্মী বাহিনী দিয়ে স্বামী ডা. মঈন হাসানের ওপর হামলা ও সর্বশেষ তার বাবা প্রয়াত মধু বয়াতির প্রথম স্ত্রী ও তিন কন্যার প্রতি অবিচারের ঘটনায় মমতাজকে পড়তে হয় বেকায়দায়। তারা মমতাজের পক্ষ ত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী টুলুকে সমর্থন দেন। এছাড়া নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় মমতাজ ও তার অনুসারীদের সভা-সমাবেশে দেওয়া আক্রমণাত্মক বক্তব্য ও বেসামাল কথাবার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে সংরক্ষিত মহিলা আসনে এমপি হন মমতাজ। ২০১৪ সালে মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ও ২০১৮ সালে এমপি হন তিনি।