মালয়েশিয়ায় যে কারণে প্রবাসীদের থেকে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন ১২ তরুণ


মালয়েশিয়া বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের অনেক সাফল্যের গল্প রয়েছে। কথায় আছে- দশের লাঠি একের বোঝা। তবে ব্যবসার ক্ষেত্রে সমবায়ের সফলতা খুব বেশি নেই বাংলাদেশি কমুনিটিতে। মালয়েশিয়া এই ১২ তরুণের গল্পটা একটু অন্যরকম। বন্ধুদের নিয়ে এখানে তারা স্বপ্ন দেখেছিল একটা ছোট্ট ব্যবসার। দেখতে দেখতে একটি শোরুম থেকে আজ তাদের মালয়েশিয়া ৪টি শোরুম হয়েছে। সততা আর পরিশ্রম দিয়ে তারা আজ এই অবস্থানে এসেছে। তাদের যাত্রাটা খুব বেশি দিনের নয়। বন্ধুরা আড্ডায় বসে চিন্তা করলেন নিজেদের জন্য কিছু একটা করতে হবে। কি করা যায় তার মাঝেই উদ্যোক্তা হবার চিন্তা মাথায় আসে। পাইকারী মার্কেটে খোঁজ নেন তারা । তখন তারা বুঝতে পারেন ইলেক্ট্রনিক পণ্য বাজারে বেশি মুল্য দিয়ে কিনতে হয় বাংলাদেশী প্রবাসীদের। তারা তখন চিন্তা করেন কিভাবে কম মুনাফা করে এবং দেশি পণ্য সকল প্রবাসীদের হাতে তুলে দেওয়া যায়। তাদের শোরুমে বেশির ভাগ পণ্যই বাংলাদেশি। এছাড়াও পাকিস্তান, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া,মায়ানমার ও লোকাল মালয়েশিয়ানদের কাছেও তারা পণ্য বিক্রি করেন। শুরুটা হয় সমীতির মাধ্যমে অর্থের সংগ্রহ করা। এই পদ্বতিতে প্রায় দুই লাখ রিঙ্গিতের একটা ফান্ড তৈরি হয়। এই ফান্ড নিয়ে তাদের ব্যবসার পথচলা শুরু। ২০২২ সালে ১ সেপ্টম্বর ফাইনান্স এসোসিয়েশন অফ ফ্রেন্ডস নামে সমীতি গঠন করেছিলেন তারা। সেই সমীতির ছাতার নিচেই তারা ব্যবসা শুরু করলেন। যাত্রা শুরু হয় এ জে রানা ও মো. আল-আমিনের হাত ধরে। মালয়েশিয়া চৌকিটে জিএম প্লাজায় তারা দোকান নেন। বর্তমানে জি এম প্লাজায় দুইটি ও চৌকিটের আসে পাশে আরো দুইটি শোরুম রয়েছে তাদের। ইলেট্রনিক আইটেম, মোবাইল এক্সেসোরিজ, ব্যাগ, পারফিউম, কম্বল, চকলেটসহ নানান ধরণের পণ্য তাদের শোরুমে রয়েছে। তারা খুব শিঘ্রিই মালয়েশিয়ার মিনি ঢাকা নামে পরিচিত কোতারায়াতে আরও একটি শোরুম খোলার চেষ্টা করছেন। ফাইনান্স এসোসিয়েশন অফ ফ্রেন্ডস চিফ মার্কেটিং অফিসার এ জে রানা জানান, আমাদের কোম্পানির ব্রান্ড হিসেবে নিজেদের পরিচয় করাতে চাই, যার ফলে বাংলাদেশিদের ভাবমুর্তী অক্ষুন্ন থাকবে। আমরা আনে বড় স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছি। আমরা চাই মালয়েশিয়ার বিভিন্ন রাজ্যে শোরুম দিব যেখানে বাংলাদেশি প্রবাসীদের বেশি বসবাস রয়েছে। ম্যানেজিং ডিরেক্টর আমির হোসেন বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য শুধু মাত্র ব্যবসা নয়। প্রবাসে নিজ দেশের ব্রান্ডিং করা এবং কম মুল্যে দেশি ভাইদের হাতে মান সম্পন্ন পণ্য হাতে তুলে দেওয়াই আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। ঈদে প্রবাসীরা তাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা করতে দেশে যায়। এই সময়ে তারা কম্বল, চকলেট ও নানান ধরণের আতর, পাারফিউম ইত্যাদি দেশে নিয়ে যান। একজন প্রবাসী তার কষ্টের টাকা দিয়ে যেন বেশি প্রডাক্ট কিনতে পারেন। তার টাকা যাতে সাশ্রয় হয় সেদিকেই তাদের বেশি নজর। ভবিষ্যতের এই তরুণদের আশা তাদের স্বপ্নকে আরো বড় আকারে প্রসারিত করবেন। মালয়েশিয়া হানিফা, হাইপার লুলু, মাইডিনের মতো বড় শোরুম চেইন স্থাপন করার ইচ্ছা তাদের। যেখানে কম দামে বাংলাদেশি প্রবাসীদের হাতে পণ্য তুলে দিতে বদ্ধ পরিকর এই তরুদের। তারা ইতোমধ্যে মালেশিয়া ই-কমার্স সাইট লাজাদা, শপিতে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, আমরা আমাদের পণ্যের মান ঠিক রেখে অন্যান্য ব্যাবসায়ীদের সঙ্গে সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ব্যাবসা করতে চাই। এই ১২ তরুণ উদ্যোক্তা মালয়েশিয়া বিভিন্ন জনকল্যাণ কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত রয়েছেন। প্রবাসীদের নানান সমস্যায় তারা এগিয়ে আসেন। তাদের উদ্যোগ আর জনকল্যান মূলক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের কমুউনিটিতে বেশ প্রশংসা পেয়েছে।