ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ভারতে নিহত ২০৭, আহত ৯০০


ভারতের এক ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ২০৭ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন প্রায় ৯০০ বেশি মানুষ। দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থ্যাগুলো। দুর্ঘটনা স্থল ও এর আশেপাশের হাসপাতালগুলোতে আহতদের জরুরি চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নিহত ও আহতদের স্বজনরা ভিড় করছেন। এলাকায় হাজার হাজার মানুষকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। জানা যায়, ভারতের উড়িষ্যা প্রদেশে দুই ট্রেনের মধ্যে ভয়াবহ এই সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২০৭ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এছাড়া দুর্ঘটনায় অন্তত ৯০০ জন আহত হয়েছে বলে খবর দিয়েছে দেশটির গণমাধ্যমগুলো। আজ শুক্রবার (২ জুন) সন্ধ্যায় উড়িষ্যার বালেশ্বরে কলকাতা থেকে চেন্নাইগামী করোমানদেল এক্সপ্রেস ও বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতাগামী অপর একটি ট্রেনের সঙ্গে এই সংঘর্ষ ঘটে। ভারতীয় রেল মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা দেশটির গণমাধ্যমকর্মীদের দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুর্ঘটনার পর খবর পেয়ে ইতোমধ্যেই স্থানীয়দের সঙ্গে সুধাংশু সারাঙ্গির নেতৃত্বে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে উড়িষ্যার ফায়ার সার্ভিস। সেই সঙ্গে স্থানীয় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলোকেও তৎপর থাকতে বলা হয়েছে। ভারতের জাতীয় বিপর্যয় ত্রাণ বাহিনী (এনডিআরএফ) ছাড়াও উড়িষ্যার মিলিয়ে অন্তত ছয় শতাধিক কর্মী আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধারে কাজ করছেন। রেল সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় মালগাড়িটি খড়্গপুর থেকে ছাড়ে। তার ১৩ মিনিট পরে খড়্গপুর স্টেশন ছাড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। মালগাড়ি এবং করমণ্ডল এক্সপ্রেস একই লাইনে চলছিল ১৩ মিনিটের ব্যবধানে। বালেশ্বর স্টেশন ছাড়িয়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার যাওয়ার পরে দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের প্রাথমিক অনুমান, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের চালক যে ওই ১৩ মিনিটের গতির ব্যবধান কমিয়ে ফেলেছেন, তা তিনি বুঝতে পারেননি। তার কারণ সিগন্যালের ত্রুটি হতে পারে। হতে পারে সিগন্যাল দেওয়া হলেও চালক তা খেয়াল করেননি। অথবা একই লাইনে যে মালগাড়িটি রয়েছে, তা তিনি খেয়াল করেননি। এদিকে, দুর্ঘটানার পরপরই ঘটনাস্থলে অন্তত অর্ধশত অ্যাম্বুলেন্স উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয়। তবে হতাহতের সংখ্যা এত বেশি যে, সেবা দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে সেগুলো। উড়িষ্যা রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ সচিব প্রদীপ জেনা এক টুইটবার্তায় জানিয়েছেন, আহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসতে বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করছে রাজ্য প্রশাসন। এবং দুর্ঘটনা স্থুলে তাবু টাঙ্গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসাও দেয়া হয়। অন্যদিকে, ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। টুইটারে এক ক্ষুদেবার্তায় তিনি লিখেছেন ‘উড়িষ্যায় ট্রেন দুর্ঘটনায় মর্মাহত। এই দুঃসময়ে আমি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চলছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’ তথ্যসূত্র: টাইমস্ অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস্‌।